কথিত আছে যে শক্তিশালী রাক্ষস মহিষাসুর একবার ইশ্বরদের সন্তুষ্ট করেছিলেন কঠোর প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে। সন্তুষ্ট ইশ্বরেরা যখন তাকে বর দিতে চাইলেন তখন তিনি অমরত্ব চাইলেন। তাকে তা দেয়া না হলে তিনি চালাকি করে বর চাইলেন যে কেবলমাত্র একজন নারী যুদ্ধে তাকে হত্যা করলে তার মৃত্যু হবে। তিনি মনে করেছিলেন যে একজন নারী তার শারীরিক শক্তির সাথে কখনো মোকাবিলা করতে পারবে না, আর তাই তিনি আসলে অমর হয়ে রইবেন। এইভাবে বরে শক্তিশালী হয়ে মহিষাসুর পৃথিবী আর স্বর্গে অরাজকতা কায়েম করলেন।
তার সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে, ইশ্বরেরা তাদের সম্মিলিত বল দিয়ে শক্তিকে তৈরি করেন যিনি একজন দেবী এবং তার বিভিন্ন রূপ। তারই একটি রূপ দুর্গা। ইশ্বরদের দেয়া অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে, দুর্গা যুদ্ধে গেলেন সিংহে চড়ে। তখন এক দীর্ঘ আর ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয় যার শেষে মহিষাসুর মারা যায়। দেবী দুর্গাকে তাই ‘মহিষাসুর মর্দিনী’ বলা হয়। তিনি মা দেবী, সর্ব শক্তিমান যিনি সকল অশুভকে ধ্বংস করেন।
প্রাথমিকভাবে হিন্দুদের এই উৎসব বসন্তে পালিত হত। তবে এখন হেমন্তের উৎসব দেবীর মূল পূজার জাকজমককে ছাড়িয়ে যায়। হেমন্তের এই উৎসব মহাকাব্য রামায়ন অনুসারে শুরু হয়েছে সেই সময় থেকে যখন রাম তাঁর স্ত্রী সিতাকে অপহরণকারী রাবণের কাছ থেকে উদ্ধারের জন্য যুদ্ধে যাওয়ার আগে অভিবাদন জানান দুর্গা দেবীকে। যেহেতু সময়ের বাইরে দেবীর পুজা করা হয়েছিল, রামের করা দুর্গা পুজাকে ‘অকালবোধন’ বলা হয়।
রামের উদাহরণ অনুসারে, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে দুর্গা পূজা এখন উদযাপিত হয় ৫ দিন (দুর্গা পূজা)- ১০ দিন ধরে (নবরাত্রি- যেখানে ৯ শক্তির পূজা হয়) ।
No comments:
Post a Comment